জুমাতুল বিদার গুরুত্ব,তাৎপর্য ও ফজিলত

জুমাতুল বিদার গুরুত্ব,তাৎপর্য ও ফজিলত


ইসলামিক ডেস্কঃ জুমুআ আরবি শব্দ এর বাংলা অর্থ শুক্রবার আর 'বিদা' অর্থ শেষ। জুমাতুল বিদা অর্থ শেষ শুক্রবার। মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি মুসলিমদে কাছে জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। সপ্তাহের অন্য দিনগুলোর তুলনায় জুমার দিনের বৈশিষ্ট্য, রমজান মাসে তাতে মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং রমজানের শেষ প্রান্তের বৈশিষ্ট্য- এ তিনের সমন্বয়ে এ দিনটির আলাদা মর্যাদা প্রমাণিত হয়। উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য সপ্তাহের প্রতিটি দিনেই ইবাদতের বিধান রয়েছে। জামায়াতের সাথে বা মসজিদে সমবেত হয়ে সম্মিলিতভাবে আল্লাহর ইবাদতে আত্মনিয়োগ করা মুসলমানদের প্রাত্যহিক কর্তব্য। তবুও সপ্তাহের একটি দিনে আরো বড় আকারে সম্মিলিত ইবাদত বা জুমার নামাজের বিধান মুসলিম উম্মাহর স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্য যেমন বাড়িয়ে দেয় , তেমটি সামাজিক ও সামষ্টিক পর্যায়ে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে পরিবেশ তৈরি করে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী অনুযায়ী প্রত্যেক নবীর উম্মতকে সপ্তাহের একটি দিন বেছে নিতে বলা হয়েছিল সামষ্টিক ইবাদতের জন্য। ইহুদিরা শনিবার ও খ্রিষ্টানরা রোববারকে বেছে নেয়। কিন্তু মুসলমানরা বেছে নেয় শুক্রবারকে। আসলে এটিই আল্লাহতায়ালার পছন্দ। সেটা বেছে নেয়ায় এ উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়।

জুমাতুল বিদার গুরুত্ব ও তাৎপর্য  
রমজানের শেষ জুমা হিসেবে মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটির বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। জুমার দিনের স্বতন্ত্র ফজিলত অনেক বেশি। শুক্রবারকে মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

রমজানের প্রতিটি জুমা ফজিলত ও তাৎপর্যের দিক থেকে অনন্য। বিদায়ী জুমা হিসেবে জুমাতুল বিদার মর্যাদা ও ফজিলত আরো বেশি। পবিত্র কোরআনে জুমার নামাজ আদায়ের তাগিদ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি কর।’ (সূরা: আল জুমুআহ, আয়াত: ৯)

প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জুমার নামাজ ফরজ। জুমার দিন ও রাত উভয়টিই ফজিলতপূর্ণ। জুমার দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যখন দোয়া করলে সরাসরি তা কবুল হয়। ধারণা করা হয়, সে মুহূর্তটি আসর থেকে মাগরিবের মাঝামাঝি কোনো সময়। এছাড়া দুই খুতবার মাঝামাঝি সময়টিও দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।
রমজান মাসের শেষ শুক্রবার হজরত সুলায়মান (আ.) জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘মসজিদ আল-আকসা’ প্রতিষ্ঠা করেন বলে ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়। এ জন্য প্রতি বছর সারাবিশ্বের মুসলমানরা রমজান মাসের শেষ শুক্রবার ‘আল কুদস’ দিবস হিসেবে উদযাপন করেন।
জুমার দিন মুমিন মুসলমানদের ঈমানি সম্মেলন হয়। এ দিনের তাৎপর্য বর্ণনা করে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে জুমাবার সর্বাধিক মর্যাদাবান ও নেতৃস্থানীয় দিন। এ পুণ্য দিনে আদি পিতা হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়। একই দিনে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন। আবার পুনরায় পৃথিবীতে আগমন করেন। এ দিনে তার ইন্তেকাল হয়। এ শুক্রবারেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। এ পুণ্য দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যখন আল্লাহর দরবারে দোয়া কবুল হয়।’ (মিশকাত)
আরও পড়ুনঃ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ