রোজা ভেঙে যাওয়ার কারণ : রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ: যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় না

রোজা ভেঙে যাওয়ার কারণ : রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ: যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় না


ইসলামিক ডেস্ক : হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেয়া হয় না। যখন রোজাদার ব্যক্তি ইফতার করে, ন্যায় পরায়ণ শাসক ও নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া।’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি)।

আজ আমরা জানবো, রোজা ভেঙে যাওয়ার কারণ, রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ এবং যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় না সেই সব কারণগুলি
 -কেউ যদি রোজা থাকা অবস্থায় কোন প্রকার পানাহার বা ধূমপান করে তাহলে নিঃসন্দেহে তা রোজা ভঙ্গের একটি কারণ হবে। ডুবে ডুবে পানি খাওয়ার মতো করে যদি কেউ সবার অজান্তে লুকিয়ে পানাহার করে সেক্ষেত্রেও রোজা ভেঙ্গে যাবে।

-রোজা রাখা মানে শুধু পানাহার থেকে না, ইন্দ্রীয় তৃপ্তি থেকেও নিজেকে বিরত রাখা। সেই অর্থে রোজা থাকা অবস্থায় যদি কেউ সহবাস করে তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। এক্ষেত্রে তাকে কাজা ও কাফফারা দুটোই করতে হবে।

-হস্তমৈথুন বা অন্য কোনভাবে যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে বীর্যপাত ঘটায় তাহলে তা রোজা ভঙ্গের কারণ হবে। এক্ষেত্রে যদি কেউ কামভাবে স্ত্রীকে স্পর্শ করার মাধ্যমেও বীর্যপাত ঘটায় তাহলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙ্গবে না

-রোজা রাখা অবস্থায় যদি মহিলাদের মাসিকের রক্ত দেখা দেয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। এমনিভাবে প্রসবজনিত রক্ত প্রবাহিত হতে থাকলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যে কয়টি রোজা নষ্ট হবে সে কয়টি পরে কাজা করে নিতে হবে।

-ওযু করার সময় গড়গড়া করা যাবে না। আর নাকে পানি দেওয়ার সময় সাবধান থাকতে হবে যেন পানি ভেতরে চলে না যায়। ইচ্ছাকৃত ভাবে পানি ঢোকালে রোজা ভেঙ্গে যাবে, অনিচ্ছাকৃত হলে সেটা আলাদা।

-ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে জীবনী শক্তি বৃদ্ধি করার জন্যে কিংবা অন্য কোন কারণে শরীরে ওষুধ প্রবেশ করানো হলে রোজা ভেঙে যাবে।

-অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হয়ে থাকে তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। অনিচ্ছাকৃত বমি হলে রোজা ভেঙে যায় না। বমি করার পর সমস্ত মুখ ভালো করে পানি দিয়ে কুলি করে ধুয়ে নিতে হবে। মুখের কোথাও বিন্দুমাত্র খাবারের কণা জমে না থাকে।কারণ আর কেউ না দেখুক, আল্লাহ তাআলা ঠিকই দেখছেন। তবে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃত ভাবে পানি খেয়ে ফেলে বা অন্য কোন খাবার খেয়ে ফেলে তাহলে রোজা ভাঙ্গবে না।
যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়
-রোজাদার অবস্থায় কারও গিবত (পরচর্চা, পরনিন্দা) করা।
-গরমের কারণে বারবার কুলি করা।
-টুথ পাউডার, পেস্ট, কয়লা বা অন্য কোনো মাজন দ্বারা রোজার দিনে দাঁত পরিষ্কার করা।
-বিনা কারণে কোনো জিনিস মুখে দিয়ে চিবানো।
-বিনা কারণে জিহ্বা দ্বারা কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা। তবে বদমেজাজি স্বামীর জন্য স্ত্রীর তরকারির স্বাদ গ্রহণ করার অনুমতি আছে।
-ঝগড়া-বিবাদ করা।
-মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।
-অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করা কিংবা পাঠ করা।

যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় না
-অনিচ্ছাকৃত বমি অথবা ইচ্ছাকৃত অল্প বমি করা। তবে মুখ ভর্তি নয়।
-অনিচ্ছাকৃত বা ভুল করে গলার ভেতরে ধুলা-বালি, মশা-মাছি অথবা ধোঁয়া প্রবেশ করা।
-অনিচ্ছাকৃতভাবে কানের ভেতর পানি প্রবেশ করা।
ইনজেকশন নেয়া।
-দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা গোশত খেয়ে ফেলা (পরিমাণে কম হলে), তবে পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে
-ভুলক্রমে পানাহার বা ভুল করে কিছু খেয়ে ফেলা।
-চোখে ওষুধ নেয়া বা সুরমা ব্যবহার করা।
-কোনো কিছুর ঘ্রাণ নেয়া কিংবা সুগন্ধি ব্যবহার করা।
-নিজ মুখের থুথু, কফ ইত্যাদি গলাধঃকরণ করা।
-ঘুমের মধ্যে স্বপ্নদোষ হলে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ