৪৯ টি দেশ নিয়ে এশিয়ার মহাদেশের অবস্থান। প্রায় ৫ বিলিয়ন মানুষের বাসবাস এই মহাদেশে। মিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সব দেশে সমানভাবে হয়নি। সম্পদের দিক থেকে উপরের সারির দেশগুলোর সঙ্গে নিচের দিকের দেশগুলোর ব্যবধান বিশাল ফারাক রয়েছে।
পার ক্যাপিটা'র ভিত্তিতে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ১০ দেশ হচ্ছে:
১০) কুয়েত
কুয়েত রাজ্য একটি রাজতান্ত্রিক রাজ্য। এ দেশের রাজধানীর নাম কুয়েত সিটি। এর আয়তন ১৭,৮১৮ বর্গ কিলোমিটার। অর্থনীতির দিক দিয়ে এরা খুবি শক্তিশালী। এ দেশের গড় জিডিপি ২৫,৮৬৯ মার্কিন ডলার। এ দেশের মূল অর্থ যুক্ত হয় খনিজ সম্পদ ‘তেল’ বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি করে। এই দেশ আন্তর্জাতিকভাবে তেল রপ্তানি করে। বিশ্বের প্রায় সকল দেশ কুয়েত হতে তেল সরবারহ করে।
৯) ব্রুনাই
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ ব্রুনাই দারুস সালাম ধনীর দিক দিয়ে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে। এটি দক্ষিণ চীন সাগরের সমুদ্র উপকূলে বিস্তৃত। মালয়েশিয়ার সাথে এর সরাসরি সংযুক্ত রয়েছে। দেশটি আকারে ছোট হলেও আর্থিক ভাবে বেশ সচ্ছল। এই দেশের গড় জিডিপি ২৬,৯৩৮.৫ মার্কিন ডলার। এ দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১২,৩৪,৫৭১ জন।
৮) দক্ষিণ কোরিয়া
কোরিয়া হলো একটি মিশ্র অর্থনৈতিক দেশ। এই দেশ ইলেক্ট্রনিক পণ্যর মাধ্যমে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে। এ দেশের গড় জিডিপি ২৭, ৫৩৮.৮ মার্কিন ডলার। এ দেশের অন্যতম ব্র্যান্ড হলো স্যামসাং ও এলজি। এই দেশের সকল কর্মীরা অত্যন্ত দক্ষ ও শিক্ষিত। তাই এদের টেকনিক্যাল ক্ষমতাও বেশী। এই দেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে।
৭) ইসরাইল
এশিয়ার সপ্তম ধনী রাষ্ট্র হলো ইসরাইল। এই দেশে শিক্ষার হার অনেক বেশী। এই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল কারণ হলো দক্ষ কর্মী ও উন্নত শিক্ষাক্রম। প্রতিযোগিতামূলক অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে ইসরাইল বিশ্বে ২৪ তম। এ দেশের গড় জিডিপি ৩৭,২৯২.৬ মার্কিন ডলার। এর জিডিপি যে সকল খাত হতে আসে সেগুলো হলো – যন্ত্রপাতি, কৃষি পণ্য, রাসায়নিক, পোশাক শিল্প ইত্যাদি।
৬) সংযুক্ত আরব আমিরাত
সংযুক্ত আরব আমিরাত পশ্চিম এশিয়ার আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। যার মোট জনসংখ্যা হলো ৯.২ মিলিয়ন। এই দেশটি ব্যবসা বাণিজ্যের দিক দিয়ে বিশ্বে ২৬ তম। এর গড় জিডিপি ৩৭৬২২.২ মার্কিন ডলার। এই দেশের মূল অর্থনীতি হলো তেল। প্রাকৃতিক খনিজ ভাণ্ডারে এই দেশ ভরপুর। মূলত গ্যাস ও পেট্রলিয়াম খনিজ তেল হতে এই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।
৫) জাপান
জাপানকে “সূর্যোদয়ের দেশ” বলা হয়। জাপান এর গড় জিডিপির পরিমান ৩৮৮৯৪.৫ মার্কিন ডলার। এই দেশ প্রযুক্তি ও টেকনিক্যাল দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে তাই এই দেশের অর্থনীতির একটা বিরাট অংশ ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য ও অটোমোবাইল খাত হতে আসে। প্রযুক্তির দিক দিয়ে জাপান বিশ্বের সেরা স্থানে আছে। অটোমোবাইলে বিশ্বের তৃতীয় স্থানে আছে।
৪) হংকং
হংকং এটি একটি স্বশাসিত দেশ। এই দেশটি পার্ল নদীর ব-দ্বীপের উপর গঠিত। এই দেশের আয়তন ১১০৪ বর্গ কিলোমিটার। ৭.২ মিলিয়ন এই দেশের মোট জনসংখ্যা। ছোট দেশ হলেও এরা অর্থনীতির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে। তাই, এদের ধনী দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে। এ দেশের মাথাপিছু গড় জিডিপি হলো ৪৩৬৮১.১ মার্কিন ডলার। হংকং পর্যটন ও বাণিজ্যিক দিক দিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে।
আরো পড়ুন:
৩) সিঙ্গাপুর
মাথাপিছু গড় জিডিপি ৫২৯৬০.৭ মার্কিন ডলার নিয়ে এশিয়ার তৃতীয় ধনী দেশের তালিকায় রয়েছে দ্বীপ রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। এ দেশে একটি খ্যাতি অর্জনকারী বাণিজ্যিক ভিত্তিক বাজার রয়েছে। আর এই বাণিজ্যিক বাজারের কারণে এই দেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বচ্ছল। এর মূল অর্থনৈতিক খাত হলো বাণিজ্য খাত। এই দেশে যে সকল ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে তা বিশ্বের সকল দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দেশটি ছোট হলেও এসব কারণে এই দেশ সেরা ধনী দেশের তালিকায় রয়েছে।
২)কাতার
পশ্চিম এশিয়ার আরব দেশ কাতারের মাথাপিছু জিডিপি ৫৯৩৩০.৯ মার্কিন ডলার । এই দেশটির একমাত্র ভূমি সীমানা রয়েছে সৌদি আরবের সাথে। এ দেশের সমুদ্র উপকূলও রয়েছে উপসাগর বরাবর। এ দেশের মূল অর্থনীতি নির্ভরশীল পেট্রোল ও তরল গ্যাসের উপর। কাতার দেশকে তেলের ভান্ডার বলা হয়। আর এই কারণেই কাতার ধনী দেশের তালিকায় রয়েছে।
১) চীন
বর্তমানে এশিয়ার ধনী দেশ হিসেবে চীনকে এক নাম্বারে রাখা হয়েছে। জনসংখ্যার দিক দিয়ে চীনের জনসংখ্যা সারা বিশ্বের মধ্যে অনেক বেশী। চীনের গড় জিডিপি ৭৩, ১৮৭.০ মার্কিন ডলার। চীনের ম্যাকাও অঞ্চলটি পর্যটন এর দিক দিয়ে সেরা। তাই অর্থনীতির একটি বড় অংশ এই অঞ্চল হতে সংগ্রহ করা হয়। তাছাড়া চীনের বস্ত্র রপ্তানিতে যে আয় হয় তা গড় জিডিপিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাছাড়াও ম্যাকাও অঞ্চল এর সাথে ১২০টিরও বেশী দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্বের প্রায় সিংহভাগ ইলেক্ট্রনিক্স ও খেলনা সামগ্রী এই চীন রপ্তানি করে থাকে আর এই খাত থেকেও চীন অনেক অর্থ আয় করে থাকে।
আরো পড়ুন:

0 মন্তব্যসমূহ