ইফতারের দোয়া ও সুন্নত

ইফতারের দোয়া ও সুন্নত


ইসলামিক ডেস্কঃ ইফতার অর্থ উপবাস ভঙ্গ করা। সারা দিন রাজা রাখার শেষে সূর্যাস্তের পর প্রথম যে খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে উপবাস ভঙ্গ করা হয়, তাকে ‘ইফতার’ বলে।  ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা উত্তম। 

নবীজি (সা.) বলেন, ‘যখন রাত্র সেদিক থেকে ঘনিয়ে আসে ও দিন এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন রোজাদার ইফতার করবে।’ (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩০)। হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে।’ (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩৩)।

ইফতারের দোয়া :
ইফতারের আরবি দোয়া’র বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা, ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

ইফতারের দোয়ার অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি।

ইফতারের সুন্নত : 
-নবী (সা.) এরশাদ করেছেন যে, যখন তোমরা ইফতার করো, তখন খেজুর বা খুরমা দিয়ে ইফতার করো। কেননা, খেজুর বা খুরমার মধ্যে বরকত রয়েছে, আর যদি খেজুর বা খুরমা না পাওয়া যায় তাহলে পানি দিয়ে ইফতার করা ভালো; কারণ পানি পবিত্রকারী। এছাড়া হাদিসে পানিমিশ্রিত দুধ দিয়ে ইফতার করার হুকুমও বর্ণিত রয়েছে। মাগরিবের নামাজ আদায় করার পূর্বে ইফতার করা মুস্তাহাব বা উত্তম।

-ইফতারের আগে রোজাদার ব্যক্তির ইফতার নিয়ে তাসবিহ-তাহলিল ও তাওবা-ইসতেগফার করা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়। ইফতার সামনে নিয়ে আল্লাহ’র কাছে কিছু চাওয়া হলে আল্লাহ তার বান্দার ইচ্ছা পূরণ করেন

ইফতারের ফজিলত ও বরকত
১) পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ তাআলার নির্দেশ করেন, ‘তোমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)।

২) মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি খুশি; একটি ইফতারের সময়, অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়।’ (মুসলিম)। 

৩) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে এবং রোজাদারের সওয়াবের সমপরিমাণ সওয়াব সে লাভ করবে। তবে ওই রোজাদারের সওয়াব কম করা হবে না।’ সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আমাদের অনেকেরই রোজাদারকে ইফতার করানোর সামর্থ্য নেই।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘পানিমিশ্রিত এক পেয়ালা দুধ বা একটি খেজুর অথবা এক ঢোঁক পানি দ্বারাও যদি কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তাতেও সেই পরিমাণ সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তিসহকারে আহার করাবে, আল্লাহ তাআলা তাকে আমার হাউসে কাউসার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্ব পর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে না।’ (মুসনাদে আহমাদ)।
আরও পড়ুনঃ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ