ব্রেইন স্ট্রোকের কারণ : ব্রেইন স্ট্রোকের লক্ষণসমূহ : ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিৎসা

 

ব্রেইন স্ট্রোকের কারণ : ব্রেইন স্ট্রোকের লক্ষণসমূহ : ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিৎসা

স্বাস্থ্য প্রতিবেদক : সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার মানবদেহের প্রতিটি কোষ এবং মস্তিষ্কের কোষেও অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হয়ে যাওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ব্রেইন স্ট্রোক বলে।

ব্রেইন স্ট্রোকের কারণ : 
-শরীরে অতিরিক্ত ওজন।
-শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের অভাব।
-ডায়াবেটিসের মাত্রা অনেকদিন ধরে বেশি থাকলে।
-পুষ্টিহীন খাবার গ্রহণ না করা।
-কোনোভাবে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্থ হলে যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে কিংবা হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের সমস্যা হলে।
-জন্ম নিয়ন্ত্রণ ওষুধ বা কোন হরমোনাল ওষুধ সেবনের কারণে।
-নিয়মিত মাদক (হিরোইন, কোকেইন জাতীয়) সেবন করলে।
-নিয়মিত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন করলে।
-মানসিক হতাশা বেড়ে গেলে।
-রক্তে অ্যামাইনো এসিড অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে।
ব্রেইন স্ট্রোকের লক্ষণসমূহ :
-চলাফেরা করতে না পারা, চলাফেরায় ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রমে অসামঞ্জস্য দেখা দেওয়া।

-শরীরের একাংশ অবশ ভাব লাগা কিংবা দুর্বল বোধ করা বা প্যারালাইসিস। 
অজ্ঞান হওয়া, খিঁচুনি, তিব্র মাথাব্যথা ও বমি।

-পা,হাত, মুখ অথবা শরীরের ডান বা বাম অংশ অবশ হয়ে যাওয়া, পা দুটিতে দুর্বল বোধ করা।

-কথা বলতে সমস্যা হওয়া, বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পতিত হওয়া, কথা জড়িয়ে আসা, অস্পষ্ট হওয়া এবং একেবারে কথা বলতে বা বুঝতে না পারা।

-এক চোখ বা দুই চোখেই ক্ষণস্থায়ী ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টি ঘোলা লাগা বা একেবারেই না দেখা।

 -হঠাত তীব্র মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ঘোরা, হঠাত করে কিছুক্ষণের জন্য হতবিহবল হয়ে পড়া, বমি বমি বোধ অথবা বমি করা।

ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিৎসা : 
স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলেই রোগীর অবস্থা বা প্রকৃতি অনুযায়ী অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে অথবা একজন নিউরো মেডিসিন বা স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রকৃতপক্ষে স্ট্রোকের চিকিত্‍সার জন্য প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনার চিকিত্‍সা ব্যবস্থা। যেমন কোনো কোনো স্ট্রোক রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে অপারেশন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে, সে ক্ষেত্রে নিউরো সার্জনের উপস্থিতি কাম্য। পাশাপাশি অনেক স্ট্রোক রোগীর হার্টের রোগ থাকতে পারে। এসব ক্ষেত্রে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শের প্রয়োজন পড়ে।এছাড়া পুর্নবাসনের জন্য ফিজিওথেরাপিষ্ট নানাবিধ ব্যায়ামের (Physiotherapy) মাধ্যমে অঙ্গ সঞ্চালন করে রোগীর জড়তা কাটিয়ে তোলেন। একজন স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর মনোযাতনা প্রবল হয়ে থাকে। তিনি পরিস্থিতির আকস্মিকতায় বিপন্নবোধ করেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। যা তার শারীরিক উন্নতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই স্ট্রোকের রোগীর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পরিবারের লোকজনের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা, নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং যত্ন। পিঠের ঘা থেকে রক্ষারজন্য খেয়াল রাখতে হবে, নিয়ম মেনে পাশ ফিরিয়ে রাখতে হবে। রোগীকে মানসিকভাবে সাহস যোগাতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় ফিজিওথেরাপী খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রেইন স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় :
-নিয়মিত ঔষধ সেবনে করতে হবে 
-উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
-ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
-চর্বি ও অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবার যেমন : ফাস্টফুড, বাদাম, ঘি, বিরিয়ানী, চিংড়ি, খাসির মাংস, ডিমের কুসম যতটুকু সম্ভব পরিহার করুন।
- ধুমপান এবং মাদক সেবনকে না বলুন।
-দৈনিক ৬ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।

আরও পড়ুন:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ