চোখের রোগের কারণ ও লক্ষণ : গ্লুকোমা রোগের লক্ষণ কী : শিশুদের টেরা চোখের চিকিৎসা- Health -

চোখের রোগের কারণ ও লক্ষণ : গ্লুকোমা রোগের লক্ষণ কী : শিশুদের টেরা চোখের চিকিৎসা
স্বাস্থ্য প্রতিবেদক : মানবদেহের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে চোখ অন্যতম। চোখ দিয়ে আমরা দেখি। মানব চোখের কার্যপ্রণালি ছবি তোলার ক্যামেরার মতো।তাই আমাদের চোখকে বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে রক্ষা করতে হবে। এবং চোখে কোন রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে  চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চোখের রোগের কারণ
-চোখে বা চোখের কোন অংশে আঘাত।
-বয়স বৃদ্ধি।
-ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস বা প্যারাসাইটের জন্য সংক্রমণ হতে পারে।
-ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন। 
-চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ।
-ভিটামিন A-র অভাব।
-বংশগত জিনের রোগ।
-অ্যালার্জি।
-দীর্ঘদিন ধরে ওষুধের ব্যাবহার।
-রিউমাটয়েড অর্থারাইটিস এবং সজোগ্রেন’স সিনড্রোম।

চোখের রোগের লক্ষণ
বা চোখের রোগের উপসর্গ

-লাল এবং ফোলা চোখ।
-দুর্বল দৃষ্টিশক্তি।
-চোখে চুলকানি এবং চোখ দিয়ে জল বের হওয়া।
-চোখ করকর করা এবং অস্বস্তি।
-দৃষ্টিশক্তি হারানো।
-চোখের মধ্যে এবং চারপাশে ব্যাথা।
-অস্পষ্ট, ঝাপসা এবং দুটো করে দেখা।
-দাগ যুক্ত দৃষ্টির উপস্থিতি যেটা - অস্বাস্তিকর।
-চোখের তারার রঙিন অংশে রঙের পরিবর্তন।
-চোখ বন্ধের সময় পর্দা সংবেদনশীল হওয়া।
-আলোতে সংবেদনশীলতা।

গ্লুকোমা রোগ 
গ্লুকোমা চোখের একটি জটিল রোগ, যাতে চোখের স্নায়ু ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি কমে যায় এবং একসময় গ্লুকোমা আক্রান্ত  রোগী অন্ধত্ববরণ করতে বাধ্য হয়। সময়মতো  চিকিৎসা করলে এ অন্ধত্বের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

চোখের রোগের কারণ 
বা কেন গ্লুকোমা রোগ হয় 

* বংশগত কারণ।

* ঊর্ধ্ব বয়স (চল্লিশ বা তদূর্ধ্ব)।
* ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্ত চাপ।

* মাইগ্রেন নামক মাথাব্যথা।

*  জন্মগত চোখের ত্রুটি ইত্যাদি।

* স্টেরোয়েড নামক ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করা।

* চোখের ছানি অপারেশন না করলে বা দেরি করলে।

* চোখের অন্যান্য রোগের কারণে।

* রাত্রিকালীন উচ্চ রক্ত চাপের ওষুধ সেবন।


গ্লুকোমা রোগের লক্ষণ কী
* ঘন ঘন মাথাব্যথা বা চোখে ব্যথা হওয়া।

* চোখে ঝাপসা দেখা বা আলোর চারপাশে রংধনুর মতো দেখা।

* ঘন ঘন চশমার গ্লাস পরিবর্তন হওয়া।

* দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে আসা বা দৃষ্টির পারিপার্শ্বিক ব্যাপ্তি কমে আসা। অনেক সময় চলতে গিয়ে দরজার পাশে বা অন্য কোনো পথচারীর গায়ে ধাক্কা লাগা।

* ছোট ছোট বাচ্চাদের অথবা জন্মের পর চোখের কর্নিয়া ক্রমাগত বড় হয়ে যাওয়া বা চোখের কর্নিয়া সাদা হয়ে যাওয়া, চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি।

* মৃদু আলোতে কাজ করলে চোখে ব্যথা অনুভূত হওয়া।

গ্লুকোমা রোগের চিকিৎসা

গ্লুকোমা রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব; কিন্তু নিরাময় সম্ভব নয়। এ রোগে দৃষ্টি যতটুকু হ্রাস পেয়েছে তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। দৃষ্টি যাতে আর কমে না যায়, তার জন্য আমাদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।

গ্লুকোমা রোগের তিন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে 

* ওষুধের দ্বারা চিকিৎসা

* লেজার চিকিৎসা

* শৈল্য চিকিৎসা বা সার্জারি

যেহেতু চোখের উচ্চচাপ এ রোগের প্রধান কারণ, তাই ওষুধের দ্বারা চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। একটি ওষুধ দ্বারা নিয়ন্ত্রণে রাখা না গেলে একাধিক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। তদুপরি তিন মাস অন্তর অন্তর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে এ রোগের নিয়মিত কতগুলো পরীক্ষা করিয়ে দেখতে হবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা। যেমন-

* দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা

* চোখের চাপ পরীক্ষা

*  ভিজুয়্যাল ফিল্ড পরীক্ষা

* চোখের নার্ভ পরীক্ষা

এ রোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করা এবং সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চক্ষু পরীক্ষা ও তার পরামর্শ মেনে চলা।

শিশুদের চোখ টেরা হলে কী করবেন 
অথবা শিশুদের টেরা চোখের চিকিৎসা 

-যেকোনো বয়সের রোগীর টেরা চোখ থাকলে চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো সম্ভব।

-পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে শিশুর চোখ পরীক্ষা করে চিকিৎসা করাতে হবে। 

-কখনো কারও চোখে একটির চেয়ে অন্যটি কম দেখতে পেলে অকুলোপ্লাস্টি সার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

-একটি বস্তুকে দুটি অথবা ঝাপসা দেখলে অকুলোপ্লাস্টি সার্জনের সাহায্য নেওয়া উচিত।

-পড়াশোনা করার সময় কারও মাথাব্যথা হলে দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করা উচিত।

-একটি চোখ বন্ধ করে, চোখের পাওয়ার নিরূপণ করে চশমা দিয়ে চোখের ব্যায়াম করে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শে টেরা চোখ সারানোর চেষ্টা করা যায়।

- অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টেরা চোখ সম্পূর্ণ সোজা করা যায়।

আরও পড়ুনঃ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ