সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়ো না হরিণী ; সোনালি কাবিন


আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১ জুলাই জন্ম গ্রহণ করেন।তিনি ছিলেন একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক।তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ গুলি হচ্ছে লোক লোকান্তর, কালের কলস, সোনালী কাবিন, মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো ইত্যাদি ।

২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদ এই কবি মৃত্যুবরণ করেন


আল মাহমুদের বিখ্যাত কবিতা


সোনালি কাবিন - (০১)

সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়ো না হরিণী

যদি নাও, দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দু'টি,

আত্নবিক্রয়ের স্বর্ণ কোনকালে সঞ্চয় করিনি

আহত বিক্ষত করে চারিদিকে চতুর ভুক্‌রুটি;

ভালোবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্বন,

ছলনা জানিনা বলে আর কোন ব্যবসা শিখিনি;

দেহ দিলে দেহ পাবে, দেহের অধিক মূলধন?

আমার তো নেই সখি, যেই পণ্যে অলংকার কিনি।

বিবসন হও যদি দেখতে পাবে আমাকে সরল

পৌরুষ আবৃত করে জলপাইর পাতাও থাকবে না;

তুমি যদি খাও তবে আমাকেও দিও সেই ফল

জ্ঞানে ও অজ্ঞানে দোঁহে পরস্পর হবো চিরচেনা

পরাজিত নয় নারী, পরাজিত হয় না কবিরা;

দারুন আহত বটে আর্ত আজ শিরা-উপশিরা।


সোনালি কাবিন -(০২)

হাত বেয়ে উঠে এসো হে পানোখী, পাটিতে আমার

এবার গোটাও ফণা কালো লেখা লিখো না হৃদয়ে;

প্র‍বল ছোবলে তুমি যতটুকু ঢালো অন্ধকার

তার চেয়েও নীল আমি অহরহ দংশনের ভয়ে।

এ কোন্ কলার ছলে ধরে আছো নীলাম্বর শাড়ি

দরবিগলিত হয়ে ছলকে যায় রাত্র‍ির বরণ,

মনে হয় ডাক দিলে সে -তিমিরে ঝাপ দিতে পারি

আচল বিছিয়ে যদি তুলে নাও আমার মরণ।

বুকের ওপরে মৃদু কম্পমান নখবিলেখনে

লিখতে কি দেবে নাম অনুজ্জ্বল উপাধিবিহীন?

শরমিন্দা হলে তুমি ক্ষান্তিহীন সজল চুম্বনে

মুছে দেবো অদ্যাক্ষর রক্তবর্ণ অনার্য প্র‍চীন।

বাঙালি কৌমের কেলি কল্লোলিত করো কলাবতী

জানতো না যা বাৎসায়ন, আর যত আর্যের যুবতী।

আর পড়ুনঃ

শেখ মুজিবকে নিয়ে বিশ্ব নেতাদের ভাবনা

শেখ হাসিনাকে হত্যার যত অপচেষ্টা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ