স্বাস্থ্য ডেস্ক : কোলন ক্যান্সার একটি যন্ত্রণা দায়ক ভোগান্তিকর এবং প্রাণসংহারী রোগ। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে কোলন ক্যান্সার চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয় এবং মৃত্যু ঝুঁকি এড়ানো সম্ভবপর হয়।
কোলন ক্যান্সার বিশ্বের সর্বাধিক প্রচলিত ক্যান্সারগুলোর মধ্যে চতুর্থ এবং মূলত উন্নত দেশগুলোতেই এর প্রচলন সবচেয়ে বেশি (৬০ শতাংশ)। ধারণা করা হয় ২০০৮ সালে বিশ্বের প্রায় ১২.৩ লক্ষ মানুষের দেহে কোলন ক্যান্সারের আবির্ভাব নিশ্চিত করা হয়েছিল যাদের মধ্যে প্রায় ৬.০৮ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যাটি কয়েক গুণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৪ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৯.২ ভাগ পরিপাক তন্ত্রের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি যাদেরঃ
-৪৫ ঊর্ধ্ব সকল বয়সী ব্যক্তি
- যাদের অতি নিকট আত্মীয়ের কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে (বাবা, মা, ভাই, বোন, ছেলে, মেয়ে)
- দেহের ওজনাধিক্য বা স্থুলতা
- যাদের কোলনে পলিপ আছে
-আইবিডি (আলসারেটিভ কোলাইটিস বা ক্রন'স ডিজিজ) রোগে আক্রান্ত রোগী
-ধূমপান, মদ্যপান অত্যধিক লাল মাংস গ্রহণকারী ব্যক্তি।
কোলন ক্যান্সারের লক্ষ্মণ সমূহঃ
-মলত্যাগের অভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন (কখনও ডায়রিয়া, কখনও কোষ্ঠকাঠিন্য)
-পায়ুপথে রক্তপাত
-মলের সাথে রক্ত যাওয়া
-কোষ্ঠকাঠিন্য
-পেটে ব্যথা
-খাবারে অরুচি
-দেহের ওজন কমে যাওয়া
-পেটে দলা বা চাকা দেখা দেওয়া
-দেহে রক্ত স্বল্পতা দেখা দেওয়া ।
কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়ঃ
১) নিয়মিত ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ,
২) সকল প্রকার তাজা সবুজ শাক সবজি ও আঁশযুক্ত ফল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ,
৩) ধূমপান, মদ্যপান ও মাদক থেকে বিরত থাকা,
৪) লাল মাংস (গরু, খাসি) যথাসম্ভব কম খাওয়া,
৫) দৈহিক ওজন কাঙ্খিত মাত্রায় বজায় রাখা,
৬) প্রত্যহ নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা,
৭) প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো।
ডাঃ এম সাঈদুল হক
সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
0 মন্তব্যসমূহ