আধুনিক জীবন যাত্রার কাঠামোয় ফ্রিজ ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব।কিন্তু আমরা খুব কমই জানি যে কিছু খাবার আছে যা ফ্রিজে রাখলে খাবারের স্বাদ ও পুষ্টিগুন নষ্ট হয়ে যায়।ফ্রিজে রাখার ফলে এসব খাবারের পুষ্টি গুন কমে যাওয়ার পাশাপাশি পঁচন প্রকিয়াও ত্বরান্বিত হয়।
যেসব খাবার ফ্রিজে রাখা উচিত নয়:
-আলুও ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। আলুও ফ্রিজে রাখলে এর শ্বেতসার ভেঙে যায়, আলু নরম হয়ে পড়ে। ফলে আলুর স্বাদ নষ্ট হয় আর মুখে নিলে বালু বালু লাগে। খোলা ঝুড়িতে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ছায়ায় আলু আর মিষ্টি আলু সংরক্ষণ করা যায়। আলুর মতো মিষ্টি আলুও ফ্রিজে রাখলে এর গঠন আর স্বাদে পরিবর্তন আসে। আলু তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। ফলে সেখানে শর্করার পরিমাণও বেড়ে যায়।
-কাঁচা অথবা পাকা কোনো টমেটোই ফ্রিজে রাখা উচিত না। টমেটো কাঁচা হলে বাইরে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে আলো–বাতাস চলাচল করতে পারে। আর পাকা টমেটো হলে সালাদ করে, রান্না করে বা টমেটো কেচাপ বানিয়ে খেয়ে ফেলুন।
-শাক ফ্রিজে রাখা উচিত না। এগুলো অধিক পচনশীল। ফ্রিজে রাখলে যতক্ষণ ফ্রিজে থাকে ভালো থাকে। ফ্রিজ থেকে বের করলেই নেতিয়ে পড়ে। এগুলো টাটকা খেয়ে ফেলা উচিত।
-কফি, ফ্রিজে না রাখা উচিত নয়। কফি বায়ুরোধী পাত্রে রাখতে হবে। ফ্রিজে রাখলে আর্দ্রতা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের কারণে কফি পাউডার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
-তুলসীপাতা ফ্রিজে রাখলে ওই পাতা ফ্রিজের অন্যান্য খাবারের ঘ্রাণ শুষে নেয়। তাই সেই তুলসীপাতা আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না।
-মরিছ ফ্রিজে রাখা উচিত না। কারণ মরিছ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় বেশি ভালো থাকে।
-মিষ্টিকুমড়াও ফ্রিজে রাখা ঠিক না।ফ্রিজে রাখলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট এবং পঁচে যেতে পারে।
-তরমুজ ফ্রিজে রাখা উচিত না। এতে তরমুজের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট দ্রুত ভেঙে যায়। তবে তরমুজ কেটে চার ঘণ্টা পর্যন্ত ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে। এর বেশি না রাখাই ভালো।
-মধুও স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ভালো থাকে। ফ্রিজে রাখলে এর শ্বেতসার অধিক ঘন হয়ে জমে দানা দানা হয়ে যেতে পারে।
- পাউরুটি ফ্রিজে রাখলে ঠান্ডায় শুকিয়ে স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। পাউরুটি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দুই থেকে চার দিন ভালো থাকে।
-পিঠা, মিষ্টি, কেক, কুকিজ ফ্রিজে রাখলে ঠান্ডায় স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। এসব খাবার বাইরে এয়ারটাইট বাক্সে রাখলে ভালো থাকে।
-রান্নায় ব্যবহৃত তেল স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই ভালো থাকে। তাই তেল ফ্রিজে না রাখা উত্তম।
-গুঁড়া মসলা ফ্রিজে রাখলেও দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। গুঁড়া মসলা অন্ধকার আর শুষ্ক স্থানে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলে ভালো থাকে।
-শুকনো ফল বা ড্রাই ফ্রুটসও কখনো ফ্রিজে রাখা উচিত না। এতে শুকনো ফলগুলো নরম হয়ে স্বাদ হারিয়ে ফেলে।
-আপেল ফ্রিজে রাখলে এর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। আপেলের মিষ্টি ও রসাল স্বাদ অক্ষুণ্ন রেখে খাওয়ার জন্য বাইরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে।
-ড্রেসিং সালাদ ফ্রিজে রাখা উচিত নয়।
-কলা, আনারস, অ্যাভোকাডো ছাড়াও পিচ, চেরি, প্লুম, লেবু ও কমলার মতো সাইট্রাস জাতীয় ফল ফ্রিজে রাখলে পুষ্টি ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়
-আচার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলে স্বাদ, গন্ধ ও গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে।
-পেঁয়াজ, রসুন ও আদা ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। এগুলো শুকনো জায়গায় ভালো থাকে।

0 মন্তব্যসমূহ