মানুষ বুড়ো হতে চায় না।সে তার চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখতে চায় আজীবন।কিন্তু ৪০ বছরের পর থেকে তার সেই তারুণ্যের কমে যেতে শুরু করে। কিন্তু জীবনযাপনে স্বাচ্ছন্দ্য থাকলে দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখা যায়। একটু সচেতনতা আর ভালো কিছু অভ্যাস বা চর্চা চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখতে পারে।তাই দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখতে মেনে চলুন কিছু নিয়ম।
তারুণ্য ধরে রাখার কিছু নিয়ম:
অথবা তারুণ্য ধরে রাখতে যা করবেন:
খাদ্যাভ্যাস
৩০ বছরের পর ক্রাশ ডায়েট খারাপ প্রভাব ফেলে ত্বকের ওপর। চেহারা হঠাৎ করে শুকিয়ে গেলে কিছুটা রোগাটে ভাব চলে আসে ঠিকই, কিন্তু চোখের চারপাশটাও কুঁচকে যায়।
নেতিবাচক অভ্যাস
নিয়মিত মদ পানে চেহারায় এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এতে রক্তনালি দৃঢ়তা হারায়। চেহারায় স্থায়ী রেখা পড়তে পারে। ত্বক শুষ্ক ও ফ্যাকাশে হয়ে যায়, গভীরভাবে বলিরেখা দেখা দেয়। একই কথা ধূমপানের বেলায়ও খাটে। অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে চেহারায় তাড়াতাড়ি বুড়োটে ভাব চলে আসে।
আরও পড়ুন: ব্রা না পরার যত উপকারিতা
অপর্যাপ্ত ঘুম
২৪ ঘণ্টায় ৮ ঘণ্টা ঘুম খুব প্রয়োজন। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থতা অনেকটাই নির্ভর করে এই ৮ ঘণ্টার ঘুমের ওপর। ভালো ঘুমে ত্বকও ভালো থাকে। চেহারায় ক্লান্তির ছাপ কমে যায়। চোখের নিচে কালো ছোপ না থাকলে চেহারা অনেকটাই উজ্জ্বল দেখায়। দিনের সময়টায় আমাদের ত্বক যুদ্ধ করতে থাকে রোদ, দূষণ আর ময়লা থেকে। ঘুম খুব দরকার এই কারণ যে স্ট্রেস হরমোন সাধারণ লেভেলে নেমে আসে। ঘুম ত্বকের কোষগুলোকে দিনের ক্ষতি রাতে পূরণ করে নেওয়ার সুযোগ দেয়।
সবুজ শাক ও লাল খাবার খান
বিভিন্ন সবুজ শাকসবজিতে থাকা ভিটামিন কে আমাদের শরীরে রক্তজমাট বাঁধতে সহায়তা করে এবং ক্ষতের প্রভাব কমায়। আর লাল বিভিন্ন খাবার আমাদের ত্বককে অতিবেগুনি রশ্মির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। এ ছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, ফল ও শাকসবজি খেলে ত্বকের রঙ অনেক ভালো হয়।
মেকআপ ব্যবহার
সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে অনেকেই বেছে নেন মেকআপ। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে, বেশি মেকআপ ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের সতেজতা কমে যায়। তাই কম মেকআপ ব্যবহার করলে তা আপনর ত্বককে সতেজ থাকতে সহায়তা করবে এবং আপনার বার্ধক্যকে বাধা প্রদান করবে।
মেকআপ নিয়ে ঘুমানো
সারা দিনের ধুলোবালি ও দূষণের ভার নিতে হয় ত্বককে। রাতের বেলায় বেচারা ত্বক কিছুটা বিশ্রাম নেয়। এ কারণেই রাতে ঘুমানোর আগে ভালো করে চেহারা পরিষ্কার করতে হবে। এ নিয়মটা কিছুটা বাধ্যতামূলকই।
সূর্যের তাপ
গরমের সময়ে রোদের কড়া তাপ ত্বকের বেশ ক্ষতি করে। এই ঘটনা কিন্তু বৃষ্টি ও শীতের দিনগুলোতেও ঘটতে থাকে। সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি কাচের জানালা গলেও আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এ কারণেই ঘর থেকে বের হওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
ব্যায়াম না করা
ব্যায়াম সব বয়সের জন্যই প্রয়োজন। ব্যায়াম রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উন্নত করে। ফলাফল ত্বকে তারুণ্যের প্রকাশ পায়।
চিনির তিতা প্রভাব
খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি থাকলে ত্বকেরও ক্ষতি হয়। রুটি, চাল, আলু গ্লাইকেশন বিক্রিয়া ঘটায় ত্বকে। এতে ত্বকের দৃঢ়তা ও নমনীয়তা কমে যায়।
ব্রণ খোঁটা
ব্রণ খোঁটার বদঅভ্যাস অনেকেরই আছে। অজান্তেই মুখের এখানে-সেখানে ব্রণের ওপর হাত চলে যায়। এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। অস্বস্তিও বোধ হয়। মুখমণ্ডলের ত্বক স্পর্শকাতর বলে ব্রণ খুঁটলে সংক্রমণ ঘটতে পারে। আর দাগ পড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
আঙুর খান
আঙুর আমাদের ত্বকের ওপর অনেক ভালো প্রভাব ফেলে। এটি আমাদের ত্বকের পানিকে আকর্ষণ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা শোষণ করে সেটি ধরে রাখতে সহায়তা করে। ফলে আপনি পেতে পারেন মাধুর্য ও উজ্জ্বলতা।
হাইড্রেট থাকুন
আমাদের শরীরের জন্য পানি অত্যন্তু জরুরি। আপনি যত বেশি পানি পান করবেন, ততই আপনি হাইড্রেট থাকবেন। আর বেশি করে পানি পান করলে তা আমাদের ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে, নিস্তেজ দেখানো রোধে এবং বলিরেখা রোধে সহায়তা করে।
চিনি ও বাড়তি লবণ পরিহার করুন
চিনিতে থাকা শর্করা এবং অতিরিক্ত লবণ আপনার শরীরে প্রদাহ বৃদ্ধি করতে পারে। আর এটি আপনার বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হতে পারে। তাই আপনার তারুণ্য ধরে রাখতে চিনি এবং বাড়তি লবণ খাওয়া পরিহার করুন।
পর্যাপ্ত প্রোটিন নিন
আপনার নিয়মিত খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন আপনার পেশিকে ফিট রাখতে সহায়তা করে। আর আপনার শরীরের কম সংজ্ঞায়িত পেশিগুলো আপনাকে আপনার বয়সের চেয়ে বেশি বয়স্ক দেখাতে সহায়তা করতে পারে। আর এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পর্যপ্ত পরিমাণে প্রোটিনজাতীয় খাবার খান। তবে চেষ্টা করুন, মাংসের প্রোটিন না খেয়ে উদ্ভিদের প্রোটিন বেশি খাওয়ার।
সঠিক পোশাক নির্বাচন করুন
সঠিক পোশাক নির্বাচন বয়স অনেকটা কমিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। আপনাকে কোন ধরনের পোশাকে মানাবে এবং কোন রঙে আপনাকে ভালো দেখাবে এই সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। সঠিক পোশাক নির্বাচন করলে বয়স অনেকটা কমে যাবে।
সানগ্লাসের ব্যবহার
সানগ্লাস একজন মানুষকে স্টাইলিশ করে দেয়ার পাশাপাশি বয়স কমিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। চেহারার সাথে মানানসই সানগ্লাস ব্যবহার করুন। যারা চোখের সমস্যার জন্য চশমা ব্যবহার করেন তারা বিশেষ প্রয়োজনে চশমা ব্যবহার না করে কন্টাক লেন্স ব্যবহার করুন। চশমা ব্যবহার করলে একটু বেশি ভারিক্কী ও বয়স্ক দেখায় যে কাউকেই।
চুলের যত্নে কাজ করুন
চুলের যত্ন সম্পর্কে সতর্ক হয়ে যান। চুল পড়া রোধে চুলের যত্ন নিন। চুলকে স্টাইলিশ রাখতে প্রয়োজনীয় প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। চুল পড়ে টাক হয়ে গেলে অনেক বেশি বয়স্ক দেখাবে।
গলার ভাঁজ
একটু বয়স হয়ে গেলে গলায় ভাঁজ পড়ে, ফলে অনেক বেশি বয়স্ক মনে হয় ছেলেদের। এই সমস্যা দূর করতে কোনো স্টাইলিশ ছাঁটে দাঁড়ি রাখুন। এতে গলার ভাঁজ ঢাকা পরে যাবে।
ঠোঁটের যত্ন নিন
ঠোঁটের যত্নে সতর্ক হোন। ঠোঁট শুকনো দেখালে এবং ফেটে থাকলে অথবা কালচে ভাব থাকলে বিশ্রী দেখানোর পাশাপাশি বয়স্ক দেখায়। তাই নিয়মিত ঠোঁটের যত্ন নিন। ভালো লিপবাম ব্যবহার করুন। ধূমপান ছেড়ে দিন।
চুলের স্টাইলে পরিবর্তন আনুন
যদি ভালো কোনো মানানসই স্টাইলিশ ছাঁটে চুল কাটতে পারেন তবে বয়স অনেক কম লাগবে। যদি চুল পড়ে টাক হয়ে থাকে তবে একেবারে চুল ফেলে দিন। এতে টাকের তুলনায় বেশ স্টাইলিশ ও কম বয়েসি লাগবে দেখতে।
আরও পড়ুন:

0 মন্তব্যসমূহ